logo
loader
In Stock
ইসবগুল ভূষি ৫০ গ্রাম
( 0 )
৳150

ওয়াফিকা ইসবগুল ভূষি

Size
ইসবগুল
Plantago ovata form.jpg
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ: Plantae
শ্রেণীবিহীন: Angiosperms
শ্রেণীবিহীন: Eudicots
শ্রেণীবিহীন: Asterids
বর্গ: Lamiales
পরিবার: Plantaginaceae
গণ: Plantago
প্রজাতি: P. ovata
দ্বিপদী নাম
Plantago ovata
Forssk.

ইসবগুল (বৈজ্ঞানিক নাম: Plantago ovata) (ইংরেজি: blond plantain,[১] desert Indianwheat,[২] blond psyllium,[৩] ispaghu) হচ্ছে Plantaginaceae পরিবারের Plantago গণের একটি গুল্ম

বিবরণ

ইসবগুল ‘গুল্ম’ জাতীয় গাছ। এর ফুল ছোট, পাপড়ি সূক্ষ হয়। বীজের খোসা আছে। ইসবগুল গাছের উচ্চতা দেড়-দুই ফুটের পর্যন্ত লম্বা হয়। ফল দুইকোষ বিশিষ্ট, ৭-৮ মিলিমিটার লম্বা হয় এবং ফলের ভিতরে ৩ মিলিমিটার লম্বা বীজ থাকে। বীজ দেখতে নৌকার মতো এবং এর খোসায় পিচ্ছিল হয়। এটা এক ধরনের রবিশস্য। হেমন্তকালে বীজ বপন করা হয়। চৈত্র মাসে ফসল তোলা হয়। ইসবগুল উপমহাদেশের সবাই চেনে। এর নানাবিধ উপকারিতা সম্পর্কেও আমরা ওয়াকিবহাল। নামের সাথে ‘গুল’ আছে বলে অনেকে ভাবি, হয়ত কোনো ক্ষুদ্র ফুলের সূক্ষ্ম পাপড়ি হবে, কিন্তু এর সম্পর্ক ফুলের সঙ্গে নয়, বীজের সঙ্গে। সঠিকভাবে বলতে গেলে বীজের খোসার সঙ্গে, যাকে আমরা ইসবগুলের ভুষি বলে জানি।। বিদেশি বাজারে এটা সিলিয়াম হাস্ক (Psyllium husk)। গ্রীক ‘সিলা’ (psylla) অর্থ এক ধরনের মাছি, ডানাহীন ফ্লি-মাছি। ইসবগুলের বীজ দেখতে আকারে অবয়বে অনেকটা ফ্লি-মাছির মতো বলে ইংরেজিতে এই নাম। ইসবগুল শব্দটা ফার্সি ‘ইসপা-গোল’ থেকে আগত যার অর্থ ‘ঘোড়ার কান’। খুব ছোট হলেও, খোসাগুলো শতশত গুণ বড় করে দেখলে ঘোড়ার কানের মতো মনে হতে পারে, তবে আমাদের খালবিলভরা জলজ উদ্ভিদ ‘ইঁদুরকানি’ পানায় ইঁদুর-কানের আকৃতির মতো তা সহজে অনুমেয় নয়। যাহোক, কল্পনাকে জলাঞ্জলি দিয়ে, যোগবিয়োগ করে আমরা একে আত্তীকরণ করেছি বাংলায়, যা উচ্চারণগতভাবে ‘ইশবগুল’ এবং বানানে ‘ইসবগুল’।

বিস্তৃতি

এর আদি বাসভূমি ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোতে। এছাড়া স্পেন, উত্তর আফ্রিকা, পাকিস্তানের সিন্ধু এলাকা, পশ্চিম এশিয়া, চীন, রাশিয়াভারত।ইসবগুলের আদি বাসভূমি ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোতে। ক্রমে ক্রমে এর বিস্তৃতি ঘটেছে স্পেন, উত্তর আফ্রিকা, পাকিস্তানের সিন্ধু এলাকা, চীন, রাশিয়া ও ভারতে। ‘প্ল্যান্ট্যাগো’ জেনাসের প্রায় ২০০ প্রজাতি আছে যার ১০টি পাওয়া যায় ভারতে। অনুমান করা হয়, ভারতে ইসবগুল প্রবেশ করেছে ষোড়শ শতকে, মোগল আমলে। পৃথিবীতে বাণিজ্যিকভাবে যে-ক’টি প্রজাতি চাষের জন্য ব্যবহার করা হয় তার মধ্যে আছে ফ্রান্সের কালো বীজ প্ল্যান্টাগো ইন্ডিকা (Plantago indica), স্পেনীয় প্ল্যান্টাগো সিলিয়াম (PLantago psyllium) ও ভারতীয় সাদাটে বীজ প্ল্যান্টাগো ওভেটা (Plantago ovata)।

প্রক্রিয়াজাতকরণ

ইসবগুল (Plantago ovata) গাছ দেড়-দুই ফুটের মতো লম্বা হয়। ফল দুইকোষ বিশিষ্ট, ৭-৮ মিলিমিটার লম্বা যার ভিতরে ৩ মিলিমিটার লম্বা বীজ থাকে। বীজ দেখতে নৌকার মতো যার খোসায় পিচ্ছিল মিউসিলেজ বা শ্লেষ্মা থাকে। এটা এক ধরনের রবিশস্য যাকে আমরা ‘চৈতালি’ বলি কারণ হেমন্তে বীজ বপন করে চৈত্র মাসে ফসল তোলা হয়, যেমনটা করা হয় মুগ-মসুরের বেলায়। উপমহাদেশে ইসবগুলের চাষ সবচেয়ে বেশি হয় ভারতের গুজরাত অঞ্চলে, অন্যান্য অঞ্চলের মধ্যে আছে রাজস্থান, পাঞ্জাব, হরিয়ানা ও উত্তরপ্রদেশ। গুজরাত থেকে আমেরিকা ও ইউরোপে ইসবগুল রফতানি হয়। বিস্তৃতভাবে ধরলে, অক্টোবর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত ইসবগুলের চাষ হতে পারে যখন বৃষ্টি থাকে না, তাপমাত্রাও থাকে ১৫ থেকে ৩০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের মধ্যে। আর্দ্রতাপূর্ণ পরিবেশ, মেঘমেদুর আকাশ আর রাতের বেলা তাপমাত্রা বেশি হলে ফলন খুব কমে যায় ফসলের। আর পুষ্ট বীজ তোলার মৌসুমে বৃষ্টি হলে রক্ষা থাকে না, ক্ষতির পরিমাণ দেখে ইসবগুল-নির্ভর চাষীদের পরিবারে হাহাকার নেমে আসে। ইসবগুলের বীজ ৩ মাস পর্যন্ত সুপ্ত অবস্থায় থাকে, এ সময়ে ঠাণ্ডা বা গরম-পানি দিয়ে স্কারিফিকেশন বা ঘষামাজা করেও বীজ থেকে চারা গজানো যায় না। কিন্তু মৌসুমে, উপযুক্ত তাপমাত্রায় ৯০ শতাংশ বীজ থেকে চারা গজিয়ে থাকে। বীজের এই প্রকৃতিগত সুপ্তাবস্থার কারণে এখন পর্যন্ত বীজ থেকে বছরে বহুবার (Multivoltine) ফসল তৈরি করা সম্ভব হয়নি। বীজ থেকে খোসা আলাদা করা এক ধরনের সূক্ষ্ম কাজ। এর জন্য সাধারণ যাঁতাকল ছাড়াও নানারকম আধুনিক যান্ত্রিক পদ্ধতি আবিষ্কৃত হয়েছে যেমন, ফ্লুইড এনার্জি-মিল, বল-মিল, ভাইব্রেটিং-মিল এবং পিন-মিল। বহুল ব্যবহৃত পিন-মিলের দুটো চাকাতেই চক্রাকারে অজস্র পিন লাগানো থাকে। চাকাগুলো বিপরীত গতিতে ঘোরার সময় দুপাশের পিনে ঠোকা খেয়ে ইসবগুলের বীজ থেকে খোসা আলগা হয়ে যায়। ফ্লুইড এনার্জি-মিলে প্রকোষ্ঠের মধ্যে অতিবেগে স্টিম বা বায়ু চালিত করার ফলে বীজে বীজে ঠোকাঠুকি লেগে খোসা আলাদা হয়ে যায়। বল-মিলে বীজের মিশ্রণের সঙ্গে পাথর বা ধাতব বল মিশিয়ে ঘোরানো হয়, ভাইব্রেটিং মিলে কম্পনের মাধ্যমে খোসা আলাদা করা হয়। যেভাবেই খোসা আলাদা করা হোক, সব পদ্ধতিরই প্রধান লক্ষ্য থাকে খোসা উৎপাদন করতে গিয়ে যেন বীজ ভেঙে টুকরো না হয়ে যায়। যাহোক সব কারখানাতেই কিছু না কিছু বীজ ভেঙে যায়, যেগুলো চালুনি দিয়ে আলাদা করা হয়। আবার খড়কুটো ধুলোবালি থেকে মুক্ত করার জন্য যেভাবে কুলো দিয়ে ধান ওড়ানো হয় সেভাবে খোসাও ওড়ানো হয়, সাবধানে হাল্কা বাতাসে।

ঔষধি গুনাগুন

ইসবগুল মানুষের শরীরের জন্য খুবই উপকারি। ইসবগুলের ভুসি [৪] বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।

  • এর মধ্যে যে অদ্রবণীয় ও দ্রবণীয় খাদ্য আঁশ থাকে তা কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্য খুব ভালো।
  • ডায়রিয়া ও পাকস্থলীর ইনফেকশন সারায়।
  • অ্যাসিডিটির সমস্যা প্রতিকার করে।
  • ওজন কমানোর ক্ষেত্রে কার্যকারী।
  • পাকস্থলীর বর্জ্য পদার্থ নিষ্কাশন করে ও হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে।
  • এর খাদ্য আঁশ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায় ও হৃদরোগ থেকে সুরক্ষিত করে।
  • ডায়াবেটিস বা বহুমূত্ররোগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
  •  
  • উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ
Post A Comment

Please Login To Comment

Please Login To Add A Review

See All

0 Items